কোমর ব্যথা বিশেষ করে সায়াটিকা (Sciatica) নার্ভ পেইনের জন্য যে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত।
সায়াটিকা নার্ভ পেইন আপনি নিজেই নির্ণয় করতে পারবেন। নিতম্ব থেকে উভয় পায়ের দিকে সায়াটিকা নার্ভ চলে গেছে। এটিই মানবদেহের দীর্ঘতম নার্ভ। মেরুদণ্ডের ডিস্ক এর সমস্যার কারণে এই ব্যথা শুরু হয় নিতম্ব থেকে এবং যে কোন এক পায়ের দিকে এই ব্যথা ছড়িয়ে যায়।
এধরনের ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়-
বিভিন্ন ধরনের ব্যথার জন্য কপার থেরাপির প্রচলন রয়েছে। মেরুদন্ডের ট্র্যাক্ট এবং পেরিফেরাল স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে হাঁটাচলায় সমস্যা, নিম্নাঙ্গের দুর্বলতা (Weakness of Lower Limbs) ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে যাকে মাইলোনোরোপ্যাথি (Myeloneuropathy) বলা হয়। এই মাইলোনোরোপ্যাথির জন্য কপার থেরাপির প্রচলন আছে। কারণ মাইলোনোরোপ্যাথির অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে কপার এর ঘাটতি।
কপার অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ, নন-টক্সিক এবং সস্তা একটি মিনারেল। মেরুদণ্ডের ডিস্কের বাইরের অংশের ৭৫% কোলাজেন দিয়ে তৈরি। সায়াটিকাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে যে এনজাইম, সেই একই এনজাইম কোলাজেন তৈরির জন্য অপরিহার্য কো-ফ্যাক্টর হিসাবে কপারকে ব্যবহার করে। কপার স্নায়ুর সাথে সংশ্লিষ্ট এনজাইমগুলিতেও ব্যবহৃত হয় এবং অন্যান্য অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য প্রয়োজনীয়। সুতরাং কপার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি মিনারেল।
কপার ঘাটতির কারণ:
• কপার সমৃদ্ধ খাবার কম গ্রহণ
• উঁচু জায়গায় Intense Physical Exercise করার ফলে কপার কমে যায়।
• যখন কপার ছাড়া জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, নিয়াসিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা হয়; তখনও কপার কমে যায়।
• আটা ময়দার সাথে অতিরিক্ত যোগকৃত মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করার ফলে কপার কমে যায়।
• টেপের পানি গ্রহণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ফ্লুরাইড গ্রহণ করার ফলে কপার কমে যায়।
• অতিরিক্ত সিনথেটিক ভিটামিন সি (এসকরবিক এসিড) গ্রহণ করার ফলে কপার কমে যায়।
• অতিরিক্ত ঘামের ফলে কপার কমে যায়।
• অতিরিক্ত রৌদ্রে থাকার কারণে কপার কমে যায়।
• অতিরিক্ত স্ট্রেস, উচ্চ মাত্রার কর্টিসল বা উচ্চ মাত্রার DHEA থাকলেও কপার কমে যায়।
• ডিস্টিলড ওয়াটার পানি পান করার ফলে কপার কমে যায়।
• অতিরিক্ত চিনি, কফি, অ্যাকোহল পান ও জিরো ক্যাল নামে কৃত্রিম চিনি (Aspartame) গ্রহণ করার ফলে কপার কমে যায়।
জেনেটিক সমস্যার কারণে কপার শোষণে সমস্যা হওয়ার ফলে কপার এর ঘাটতি হতে পারে।
ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়-
শরীরে ব্যথা নিরাময়ে কপার ব্রেসলেট প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। কপার চামড়ার সাথে লেগে থাকায় সেদিক দিয়ে কপার শোষণ হয়ে শরীরের সংশ্লিষ্ট অংশে ব্যথা বেদনা কমে যায়। কোমরে কপার ব্রেসলেট পড়লেও কিন্তু সায়াটিকা নার্ভ এর ব্যথা কমে যায়।
সমস্যা সমাধানের জন্য কপার সমৃদ্ধ ডায়েট গ্রহণ বাড়াতে হবে।
কপার সমৃদ্ধ কতিপয় খাবার
১) কলিজা
২) শামুক
৩) শেল ফিস যেমন কাঁকড়া, চিংড়ি
৪) ডার্ক চকোলেট
৫) কাজু বাদাম
৬) মাংস
যদি কেউ কপার সাপ্লিমেন্ট নিতেই চান তাকে কপার ও জিংক এক সাথে নিতে হবে। এই দুইটা শরীরে এক সাথে কাজ করে থাকে। শুধু একটি নিলে অন্যটি কমে যাবে।
উপরের এই সাপ্লিমেন্টটি ছাড়াও আরও লাগবে ভিটামিন-ডি, ম্যানেশিয়াম, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-ই ও ফিস ওয়েল এবং সাথে সঠিক ডায়েট ও লাইফ স্টাইল ঠিক করতে পারলে শরীরের যে কোন ব্যথা সেটি মাসল বা নার্ভ এর যেটির হোক না কেন, ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে আসবে।
সকল সমস্যার জন্য আমরা যারা ওষুধ খুঁজি, তাদের জন্য বার্তা হচ্ছে ব্যথা স্থায়ীভাবে নিরাময়ের জন্য কোন ওষুধ নেই। ব্যথা যখন খুব বেশি, সহ্য করতে পারে না, তখনই কেবল ওষুধ দিয়ে সাময়িক সময়ের জন্য ব্যথাকে সাপ্রেসড করা হয়ে থাকে মাত্র। ব্যথার প্রকৃত কারণ নিরাময়ে কোন ব্যবস্থা নাই।
পুরো লেখাটি পড়তে গ্রুপে যোগ দিন
https://www.facebook.com/groups/198742639013857/?ref=share_group_link
লেখক
রাজু আহমেদ বাবু
নিউট্রিশনিস্ট কোচ